আজ বৃহস্পতিবার, ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বেচারা এখন কষ্টে ভুগেন

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি হলেও এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান নিজস্ব বলয় নিয়ে আলাদাভাবে দলীয় কর্মসূচী পালন করেন। যা নিয়ে সমালোচনা হয় দলের ভেতর। এ নিয়ে কিছুটা কষ্টে ভুগেন সভাপতি এডভোকেট আবুল কালাম। তবে এক সময়ে তিনিও একটি বিদ্রোহী কমিটির পক্ষে ছিলেন।
সূত্র মতে, ২০০৯ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে শহর বিএনপির সভাপতি হন সাবেক পৌর কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম আর সাধারণ সম্পাদক হন এটিএম কামাল। এ কমিটি না মেনে আরেকটা পাল্টা কমিটি হয় শহরে। বিদ্রোহী সে কমিটির সভাপতি হয়েছিলেন আমলাপাড়ার তারু সরদারের ছেলে নূরুল ইসলাম সরদার, সাধারণ সম্পাদক হন এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। প্রত্যক্ষদর্শী নেতারা জানান, ওই সময়ে শহর বিএনপির দুই কমিটি আলাদা আলাদা ভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করতেন। সাধারণত শহরের দক্ষিণ প্রান্তে বিএনপি কার্যালয়ে জাহাঙ্গীর-কামালের কমিটির নেতাকর্মীরা থাকতেন। অপরদিকে সরদার-সাখাওয়াতের বিদ্রোহী কমিটি সভা করতেন শহরের কালীরবাজার, আমলাপাড়া অথবা হোসিয়ারী সমিতি মিলনায়তনে। মূল কমিটির সভা-সমাবেশে কেন্দ্রের অনেক নেতা এলেও বিদ্রোহী কমিটির কর্মসূচীতে বেশী দেখা যেতো বিগ্রেডিয়ার (অব.) হান্নান শাহ কে।

দলের একাধিক নেতা জানান, ওই সময়ে শহর বিএনপির মূল কমিটির পক্ষে ছিলেন তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। বিদ্রোহী কমিটির ছায়া ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি এডভোকেট আবুল কালাম। সাখাওয়াত তখন কালামপন্থি ছিলেন। আর কালামই শহরে এ বিরোধ জিইয়ে রেখেছিলেন। বিরোধ এতটাই তুঙ্গে ছিলো যে, দুই পক্ষের মধ্যে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছিলো। এমনকি প্রেস ক্লাবে ঘটা করে এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত করেছিলো। তবে ধীরে ধীরে মিইয়ে যায় বিদ্রোহীরা। ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ২৩ সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। এ কমিটিতে সভাপতি করা হয় শহর বিএনপির বিদ্রোহী কমিটির ছায়ায় থাকা আবুল কালামকে আর সাধারণ সম্পাদক হন শহর বিএনপির মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল।

এদিকে এডভোকেট সাখাওয়াত এক সময়ে আবুল কালামের ঘনিষ্ঠজন থাকলেও পরে তাদের মধ্যে ফাটল ধরে। রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, সাখাওয়াত নারায়ণগঞ্জ -৫ আসনের মনোনয়ন চাওয়ার পর থেকেই তাকে অপছন্দ করতে শুরু করেন কালাম। এছাড়া মহানগর বিএনপির সভাপতিও হতে চেয়েছিলেন সাখাওয়াত। মোদ্দা কথায়, পদ আর ক্ষমতা নিয়েই এ দু’জনের দ্বন্দ্ব শুরু হয় যার রেশ চলছে এখনও। একই দল ও একই কমিটির হয়েও সাখাওয়াত এখন আলাদাভাবে দলীয় কর্মসূচী পালন করেন। যা নিয়ে কমিটির অধিকাংশ নেতার মনে ক্ষোভ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশী কষ্ট পান মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম। তিনি এক সময়ে যে সাখাওয়াতকে বিদ্রোহী হতে শিখিয়েছিলেন সে সাখাওয়াত এখন তার বিদ্রোহ করছে বলে।